শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ও অনুষদ ইউনিট থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের স্বেচ্ছায় পদত্যাগের হিড়িক উঠেছে।
সোমবার (১৫ জুলাই) সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় পদত্যাগের হিড়িক। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের অন্তত ২২ জন নেতা-নেত্রী পদত্যাগ করেছেন।
শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার সঙ্গে নেতাদের সম্পৃক্ততার কারণে সংগঠনের মেসেঞ্জার গ্রুপগুলো থেকে বের হয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়াও অনেকেই নিজস্ব ফেসবুক প্রোফাইলে পোস্ট দিয়েও পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
পদত্যাগ করা নেতারা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের সহসভাপতি জান্নাতুল মাওয়া, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি হাসিবুল হাসান হাসিব, বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলের অর্থ সম্পাদক জুয়েনা আলম মুন এবং একই হলের আইন সম্পাদক সিরাজাম মনিরা তিশা, এই হলেরই প্রচার সম্পাদক আমরিন জান্নাত তাইরু, একই হলের নাট্য ও সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক মেহেরুন্নিসা মিম।
ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ আহমেদ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি নুরুল ইসলাম হৃদয়, একই অনুষদের বিষয়ক উপ সম্পাদক জেবা সায়ীমা, সার্জেন্ট জহরুল হক হল ছাত্রলীগের সহ সভাপতি ওয়াসিক, শামসুন নাহার হল ছাত্রলীগের উপ-পাঠাগার সম্পাদক ইসরাত জাহান সুমনা, বিজয় একাত্তর হল শাখার গ্রন্থনা ও প্রকাশনা উপসম্পাদক শাহ সাকিব সাদমান প্রান্ত, জসীমউদ্দিন হল ছাত্রলীগের মো. রাফিউল ইসলাম রাফি, একই হলের কার্যনির্বাহী সদস্য মেহেদী হাসান।
বাংলা ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পরপরই পদত্যাগ করেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ শাখার গণযোগাযোগ ও উন্নয়ন সম্পাদক মাছুম শাহরিয়ার, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট শাখার মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণাবিষয়ক উপসম্পাদক রাতুল আহামেদ ওরফে শ্রাবণ কলাভবন ছাত্রলীগের এক নম্বর সহসম্পাদক মো. মুহাইমিনুল ইসলাম, আইন অনুষদ শাখার গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক আশিকুর রহমান ওরফে জিম এবং রাসেল হোসেন।
বঙ্গবন্ধু হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি হাসিবুল হাসান হাসিব তার ফেসবুকে লেখেন, “আমি হাসিবুল হাসান হাসিব সহ-সভাপতি বঙ্গবন্ধু হল ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ছাত্রলীগের সঙ্গে আমার পূর্বের সব সম্পর্ক ত্যাগ করলাম, আমার ছোটভাই বন্ধুদের অনেককে নির্মমভাবে পেটানো হইছে। ঘৃণা হচ্ছে ছাত্রলীগের একজন কর্মী হিসাবে এতদিন কাজ করায়; বিদায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ!”
বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলের অর্থ সম্পাদক জুয়েনা আলম মুন লেখেন, “ছাত্রলীগকে ন্যায়ের কান্ডারি ভেবে ছাত্রলীগ করতাম। কিন্তু এখন এই সংগঠনের সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততা ছিল এটাও মনে করলে আমার রক্তাক্ত বন্ধুবান্ধবী, সিনিয়র, জুনিয়রদের চেহারা মনে পড়বে। তাই স্বেচ্ছায়, সজ্ঞানে পদত্যাগ করছি।”
ইসরাত জাহান সুমনা লেখেন, “আমি ইসরাত জাহান সুমনা উপ-পাঠাগার সম্পাদক বাংলাদেশ শামসুন নাহার হল শাখা ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পদ থেকে সজ্ঞানে অব্যাহতি নিচ্ছি। এই পদ এবং সংগঠনে আমার কোনো পরিচয় নেই, বরং ঘৃণিত এবং লজ্জিত হবো নিজেরই কাছে।”