ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি (গাজীপুর)
গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈরে ছাত্রদের অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনে রবিবার(৪ আগস্ট) আওয়ামী লীগের অফিস ও পুলিশ বক্সে আগুন, থানায় হামলার চেষ্টা এবং নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসের নিচে থাকা কয়েকটি গাড়ি ভাঙ্চুরের ঘটনা ঘটেছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল চালায়।
এদিকে, উপজেলার সফিপুর আনসার একাডেমির ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলে আনসার সদস্যদের সাথে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় আনসার সদস্যরাও তাদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ছুড়ে।
পুলিশ ও আনসারদের রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল এ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিশু শিক্ষার্থীসহ দুই শতাধিক আহত হয়েছেন।
আহতদের উপজেলার বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে।
জানা যায়, কোটা আন্দোলনকারীদের ডাকা সরকার পতনের এক দফা দাবিতে অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিন আজ রবিবার সকালে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আন্দোলনকারীরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেন। উপজেলার কালিয়াকৈর বাইপাস, সফিপুর, পল্লীবিদ্যুৎ এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেন।
পরে তারা বেলা ১২টার দিকে মহাসড়কের চন্দ্রা এলাকায় আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙ্চুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় আন্দোলনকারীরা চন্দ্রায় নাওজোর হাইওয়ে থানার পুলিশ বক্সে প্রথমে ভাঙ্চুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে আন্দোলনরতরা মিছিল নিয়ে কালিয়াকৈর থানা ঘেরাও করে থানা ভাঙ্চুর করে এবং থানার ভেতরে অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করলে, পুলিশ আন্দোলনকারীদের সরাতে গুলি ছুড়ে। পরে আন্দোলনকারীরা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসের নিচে থাকা মোটরসাইকেলসহ কয়েকটি গাড়ি ভাঙ্চুর করে।
এ সময় পুলিশের সাথে আন্দোলনকারীদের দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে এবং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম নাসিম আহত হন।
এক পর্যায়ে আন্দোলনকারীরা পিছু হটলেও থানার সামনে থাকা কয়েকটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
পরে আন্দোলনকারীরা কালিয়াকৈর প্রেসক্লাব ভবন ভাঙ্চুর করে।
প্রেসক্লাবের সভাপতি আইয়ুব রানা প্রেসক্লাব ভাঙ্চুরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, উপজেলার সফিপুর আনসার একাডেমির ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করে আন্দোলনকারীরা। এ সময় আনসার সদস্যদের সাথে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে আনসার সদস্যরা আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ছুঁড়লে শিশুসহ অন্তত দুই শতাধিক আহত হন।
বিকেলে উপজেলার সফিপুর বাজার এলাকায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের কার্যালয় ভাঙ্চুর করে আন্দোলনকারীরা। পরে আন্দোলনকারীরা সফিপুরের জেলা পুলিশ বক্সে আগুন ধরিয়ে দেন।
এমন অবস্থায়, গুলিতে আহতদের উদ্ধার করে উপজেলার বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিক ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে আহতদের মধ্যে বেশিরভাগ শিশু ও ছাত্র রয়েছে বলে জানা গেছে।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম নাছিমকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি।