স্টাফ রিপোর্টারঃ
রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (আরপিসিএল) এর কাজে গ্যাস লাইন স্থাপনে গাজীপুরের মুলাইদ হতে ময়মনসিংহ বাইপাস তিতাশ গ্যাস পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার এবং ৬৯ ফিট প্রস্থ গ্যাস পাইপ স্থাপনে জমি অধিগ্রহনের কাজ চলছে। গাজীপুরের মুলাইদ ও ময়মনসিংহ ভালুকার হবির বাড়ী মৌজায় ফারুক মাস্টার গং ফেরদোসের জায়গা ভাড়ায় চুক্তি ভিত্তিক ৪ হাজার স্কয়ার ফিট পোল্ট্রি খামারের সেট তৈরী করেছেন। পাশেই রতন মাস্টারের জায়গায় গড়ে তুলেছেন আরো দুটি ৬ হাজার স্কয়ার ফিট সেট। দালালের মূলহোতা স্কুল শিক্ষক জালাল, কাঠালী মৌজায় অধিগ্রহণের আনিচের জায়গা ভাড়া নিয়ে গড়ে তুলেছেন ৬ হাজার স্কয়ার ফিটের দুটি পোল্ট্রি সেট। কিছু দূর এগিয়ে গেলে বাশীল মৌজায় কাজলের জায়গায় ভাড়া নিয়ে তৈরী করেছেন ৪ হাজার স্কয়ার ফিট গরুর ফার্ম। বাস্তব কথা হলো গরুর ফার্মের ঘর আছে কিন্তু গরু নাই। এই গরুর ফার্মের ঘরের মালিক শ্রীপুরের মাওনা এলাকার জালাল মাষ্টার ও ফারুক মাষ্টার।
অধিগ্রহনে জায়গায় অবৈধভাবে ঘর নির্মান করে এলও শাখার যৌথ তালিকায় নাম উঠানোর পায়তারা করছে। এতে সরকারের
শত কোটি টাকা লোপাটের চেষ্টা করছে দালাল চক্র। এতে জড়িত রয়েছে গাজীপুর ও ময়মনসিংহ এলও শাখার কিছু অসাধু কর্মকর্তা। এতেই হুমরি খেয়ে পড়েন আরপিসিএল এর সার্ভেয়ার ও ভালুকার উথুরা এলাকার সার্ভেয়ার ফিরোজ, শ্রীপুরের বারতোপা এলাকার সার্ভেয়ার সরাফত ও গফরগাঁওয়ের পাইথল এলাকার সহকারী নূরুল ইসলাম এবং ময়মনসিংহ এলও শাখার ভালুকা থেকে ত্রিশাল পর্যন্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত সার্ভেয়ার আঃ রাজ্জাক, সার্ভেয়ার মামুন ও সার্ভেয়ার নুরুল ইসলাম।
ময়মনসিংহ এলও শাখার সার্ভেয়ার রাজ্জাক ও মামুনের সম্বনয়ে গঠিত দালাল চক্রের মূলহোতা মাওনার জালাল মাষ্টার, ফারুক মাস্টার, এমসি বাজারের আবুল বাশার, আমিনুল,ছানোয়ার,পাগলা থানার পাইথল এলাকার নুরুল ইসলাম। এবার আসা যাক মিরকা মৌজায়, যেখানে জলাশয় বিলকে দেখানো হচ্ছে পুকুর। সেই পুকুরে মূলহোতা জালাল মাষ্টার গং। তাদের নামে পুকুর দেখানো হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টি। যার ২০টি পুকুরের মালিক বনে গেছেন ভালুকার মাছ ব্যবসায়ী খোকন সাহাসহ ত্রিশালের বগার বাজার এলাকার কামাল উদ্দিন, এমসি বাজারের ছানোয়ার ও আমিনুল গং।
দেশের বিভিন্ন উন্নয়ন ও অবকাঠামো নির্মাণের লক্ষ্যে সরকার জমি অধিগ্রহণ করেন। অফিস-আদালত, শিল্প-কারখানা, দালান-কোঠা, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, সড়ক-সেতু কিংবা বেসরকারি পর্যায়েও বিভিন্ন উন্নয়নমূল কর্মকাণ্ডে জমি অধিগ্রহণ করা হয়। উল্লেখ্য আছে স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল আইন-২০১৭ ধারা (১৩) অনুসারে ধর্মীয় উপাসনালয়, কবরস্থান ও শ্মশান অধিগ্রহণ করা যাবে না।
জানাগেছে, গাজীপুরের মুলাইদ থেকে ময়মনসিংহের বাইপাস তিতাস গ্যাস পর্যন্ত জমি অধিগ্রহণ হচ্ছে । এতে দিশেহারা হয়ে পড়েন দালাল চক্রের মূলহোতা জালাল মাষ্টার,ফারুক মাষ্টার, হাজী মোস্তফা ও জমির মালিকরা। অধিক ক্ষতিপূরণ পাওয়ার লোভে রাতারাতি গাজীপুরের শ্রীপুরের মুলাইদ ও তেলীহাটি মৌজায় তৈরী করেছেন, ৮ হাজার স্কয়ার ফিটের ফ্যাক্টরীর সিট, যার মালিক উত্তরার হাজী মোস্তফা। আরেক দালাল মাওনার জালাল মাষ্টার ও ফারুক মাষ্টার ৫ হাজার স্কয়ার ফিটের সিট ও অসংখ্য পোল্ট্রি ও গরুর খামারের সিট তৈরী করেছেন। যেখানে গরু ছাগল, হাঁস মূরগী কিছুই নাই। সেখানে রয়েছে ফ্যাক্টরী নেই কোন মেশিনারীজ যন্ত্রপাতি। এ যেন সরকারী টাকা লোটপাটের তেলেছমাতি। গাজীপুরের এলও শাখার কিছু অসাধু সার্ভেয়ার ও কানুগো জড়িত। নালা ডুবা, জলাশয় বিলকে দেখানো হচ্ছে ৭ থেকে ১২ ফুট গভীর পুকুর ও স্থাপনা নির্মাণে চলে তোড়জোড়। শুরু হয় দালালদের দৌরাত্ম্য।
এ ব্যাপারে ময়মনসিংহ আরপিসিএল এর প্রকৌশলী প্রশান্ত কুমার সুত্রধর জানান, আমরা তালিকা করছি কয়েকদিনের মধ্যেই এলও শাখায় পাঠিয়ে দিবো।
দালাল চক্রের চুক্তিতে
এসব এলাকার অধিগ্রহণের আওতাধীন একাধিক জমি মালিকের সাথে কথা বলে জানাগেছে, অধিগ্রহণ মর্মে প্রাথমিক নোটিশ জারির পরপরি দালাল চক্রের দৌরাত্ম্য বাড়ে। চুক্তি ভিত্তিক ৪৫% টাকা হাতিয়ে নিতে স্থাপনা নির্মাণে মোটা অঙ্কের অর্থ ইনভেস্ট করেন দালাল চক্র। কোনো খরচ ছাড়াই ৫৫% পাবেন জমির মালিকেরা। এমন অফার পেয়ে বিদ্যুৎ গতিতে চলে স্থাপনা নির্মাণ কাজ।
দালালদের নিয়োগ প্রাপ্ত মুলহোতা জালাল মাষ্টার জানান, একটা নোটিশ পেয়েছি, এখন কোনো খবর নেই, মাপামাপি চলছে। এখানে অনেক কাজও করা হইছে।
কাঠালী মৌজার এক জমির মালিক আনিছ মিয়ার সাথে কথা বলে জানা যায় , জালাল মাস্টার বছরে ৩ লাখ টাকা চুক্তিতে দুটি পোল্ট্রি ফিডের দুটি বড় বড় ঘর তৈরী করেছে এবং চুক্তির টাকাও পরিশোধ করে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে ময়মনসিংহ এলও শাখার কানুগো মজিবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,যৌথ তালিকায় দালালদের নাম উঠানো আগে আপনাদেরকে (সাংবাদিকদের)
জানানো হবে।
সময়ের অনুসন্ধান চলবে