ছবি:আমাদের অনুসন্ধান চলছে
পিরোজপুরের জেলা মঠবাড়িয়া পৌরসভায় বাংলাদেশ সরকার ও এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় স্হানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কারিগরি সহায়তায় “উপকূলীয় শহর পরিবেশগত অবকাঠামো প্রকল্প”এর বিগত ২০১৬-২০১৭ ও ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ৫১,৪২,০৩,০৭৫ (একান্ন কোটি বিয়াল্লিশ লক্ষ তিন হাজার পচাত্তর) টাকা ব্যয়ে সুপেয় পানি সরবরাহের লক্ষ্যে গ্রাউন্ড ওয়াটার রিজার্ভার,পাম্পহাউজ, দুটি ওভার হেড ট্যাংক,পাইপ লাইন নেটওয়ার্কসহ ‘সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট,দুটি সুউচ্চ জলাধারসহ পানি সরবরাহ পাইপলাইন নির্মান প্রকল্প’ প্রায় ৬ কিঃ মিঃ এম এস পাইপ দিয়ে বাস্তবায়ন করা হয়।
০১/০৪/২১ ইং তারিখ চালু পানি সরবরাহ ব্যবস্হায় ব্যবহৃত এম এস পাইপে লিকেজ সমস্যার কারনে বর্তমানে প্রতিদিনই মেরামত প্রয়োজন যা অত্যন্ত শ্রমসাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল।এ কারনে প্রতিদিন প্রায় লক্ষাধিক লিটার পানি অপচয় হচ্ছে। সংষ্কার কাজ চলতে থাকলে পৌরসভার গ্রাহকদের কাছে নিয়মিত পানি সরবরাহ করা খুবই সমস্যার বর্ননা উল্লেখ করে এম এস পাইপের স্হলে এইচ ডি পি ই (HDPE: High density polythyline)পাইপ প্রতিস্হাপনের প্রস্তাব করে ০১/০৭/২৪ ইং তারিখ সাবেক পৌর প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মঠবাড়িয়া মোঃ রাইসুল ইসলাম ,উপ পরিচালক স্হানীয় সরকার পিরোজপুরের দৃষ্টি আকর্ষণ পূর্বক, জেলা প্রশাসক পিরোজপুর বরাবর লিখিত প্রস্তাব করেন।
তথ্য অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা গেছে, মঠবাড়িয়া পৌরসভার অদুরে টিকিকাটা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড সূর্য্যমনি গ্রামে ১০ একর কৃষি জমি অধিগ্রহণ করে সুপেয় পানির প্রকল্প স্হাপন করে পৌর শহরে ৬ কিঃমিঃ নেটওয়ার্ক পাইপের মাধ্যমে সংযোগ দেয়া হয়। তথ্যের জন্য পৌরসভার দ্বারস্থ হলে পৌরনির্বাহী কর্মকর্তাসহ প্রকৌশল বিভাগের সকলে বিষয়টি এড়িয়ে তালবাহানা শুরুর এক পর্যায়ে পৌরসভা থেকে সরবরাহকৃত লিখিত তথ্যে জানাযায়, অফিসে প্রকল্পের কোন সিডিউল সংরক্ষিত নেই। প্রকল্প বাস্তবায়ন কালীন (পিডি,টিমলিডার -এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক) ,(ডিপিডি,সহকারী প্রকৌশলী, উপ-সহকারী প্রকৌশলী ,কনসালটেন্ট কৃষ্ণ পদ রায়, স্হানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর,ঢাকা), পৌর মেয়র রফিউদ্দিন আহম্মেদ ফেরদৌস,নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস ছালেক সহ ১৮ জন কর্মকর্তা/ কর্মচারী দেখভাল করার দায়িত্বে ছিলেন।প্রকল্পের কাজ সমাপ্তির সন্তোষজনক ক্লিয়ারেন্স সনদ দেন পিডি,স্হানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, ঢাকা।
প্রকল্প দেখভালের জন্য পর্যাপ্ত লোকবল থাকা সত্ত্বেও হয়েছে পুকুর চুরি।পৌরসভার ৭ ও ৮ নং ওয়ার্ডে দু’টি পানির ট্যাংক এর জন্য জমি অধিগ্রহন নিয়েও রয়েছে নানা রকম অনিয়ম আর অর্থ লুট।
উপজেলার দক্ষিন সোনাখালী গ্রামের আনছার আলী হাওলাদার এর পুত্র মোঃ নজরুল ইসলাম হাওলাদার আক্ষেপ করে জানান, তার স্ত্রী শিরিন আক্তার এর নামে পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডে জেএল -২১ এস এ খতিয়ান -১৭৬ দাগ-৯৭১, ১৪ শতক জমি তৎকালীন মেয়র রফিউদ্দিন আহম্মেদ ফেরদৌস নানা কৌশলে পানির ট্যাংকের জন্য অধিগ্রহন করেন।মামলা শালিস ব্যবস্হা করেও কোন সুফল না পেয়ে অনুপায় হয়ে সামান্য মূল্য নিয়ে বিদায় হন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পৌরসভার একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ৩০ বছর স্হায়িত্ব সম্পন্ন নতুন উন্নত মানের ২০ ফুট দৈর্ঘ্য ৮ মিঃ মিঃ পুরু ও ১২ ইঞ্চি ব্যাসের এম এস পাইপ ব্যবহার করার নির্দেশনা থাকলেও ঢাকার ধোলাই খাল পাড় থেকে ব্যবহৃত পুরাতন নিম্নমানের পাইপ ক্রয় করে জোড়াতালি রং দিয়ে ব্যবহারের কারনে দুই বছর যেতে না যেতেই পাইপের লিকেজ সমস্যার সংষ্কার কাজ শুরু হয়।
সুত্র জানায়, কাজের শুরুতে নিম্নমানের নির্মান সামগ্রী সম্পর্কে কর্তৃপক্ষের নজরে আনার বহু চেষ্টা করেও কোন সুফল আসেনি বরং হুমকী আর চাকরী হারানোর শঙ্কা ছিল প্রকল্প চলাকালীন সময়।
দুই বছরান্তে পানি প্রকল্পে ত্রুটি দেখা দিলে নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস ছালেক সাবেক প্রশাসক আরিফ উল হককে ম্যানেজ করে সটকে পরেন। যিনি বর্তমানে বরিশালের মুলাদী পৌরসভায় কর্মরত আছেন।
অনুসন্ধানে বেড়িয়ে এসেছে পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ ও নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস ছালেক বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ২১ নং ওয়ার্ডের মুন্সীর গ্রেজ মুসলিম গোরস্তান রোডে ১৪ শতক জমি জুড়ে “সূর্য্য দীঘল বাড়ি” নামে যৌথ একটি ৮ তলা ফ্লাট বাড়ি নির্মান করেছেন।
এ দিকে নির্বাহী প্রকৌশলীর পদটি শুন্য থাকায় মঠবাড়িয়া পৌরসভার উন্নয়ন কাজ ব্যহত হচ্ছে।
কনসালটেন্ট কৃষ্ণ পদ রায় নিজের দায় এড়িয়ে বলেন, “কাজের শেষ পর্যন্ত আমি ছিলাম না।”
মঠবাড়িয়া পৌরসভার সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস ছালেক কে একাধিকবার ফোন দিলেও রিসিভ করেননি।
পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ হারুন অর রশীদ
গণমাধ্যমকে এই কথা জানিয়েছেন। প্রকল্পের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই।”
সম্প্রতি দায়িত্ব প্রাপ্ত পৌর প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মাধবী রায় তৃতীয় মাত্রা কে বলেন, আমি সম্প্রতি দায়িত্ব নিয়েছি, “আমি কিছুই মন্তব্য করতে পারছি না।”